বন্দর প্রতিনিধি:
সেহরীর সময়ে শেষ কথা হয়েছিলো দুই সন্তানের সাথে। ঘুমুবার আগে একটু বুঝতে পারেননি এ দেখাই শেষ দেখা। এভাবেই বলছিলেন আর কাঁদছিলেন বন্দরে বাড়িওয়ালার অনিয়মের বলি হওয়া দুই শিশু সন্তানের মা রুনা আক্তার। বিলাপ করছিলেন, ‘আর কোন দিন দেখা হবে না। মা বলে ডাকবে না। খাবে না আর সেহরী’। শুক্রবার ভোর ছয়টার দিকে বন্দর খানবাড়ি উইলসন রোডে সেপটি ট্যাংকি বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মাশনুন (১২) ও জিসান (৮)। মারাত্মক আহত পাশের বাড়ির অন্তঃসত্ত্বা লাবনী আক্তার হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। তার এক কন্যা সহ আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। এ ঘটনায় বন্দর থানায় বাড়িওয়ালাকে আসামী করে মামলা করেছেন নিহত দুই শিশুর পিতা খোরশেদ আলম। সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে অনিয়মের বলি আর কতজনকে হতে হবে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সুদূর চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার কোমরকাশা এলাকার মো. আলী হোসেন মিয়ার ছেলে হোশিয়ারী ব্যাবসায়ী খোরশেদ আলমসহ তার পরিবার র্দীঘ ২ বছর ধরে বন্দরের খানবাড়ি উইলসন রোডের দীঘিরপাড় রাবেয়া মঞ্জিলের ৫ম তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লাটে বাস করেন। এক কক্ষে তার দুই ছেলে ঘুমায় আরেক কক্ষে থাকেন ছোট মেয়েকে নিয়ে তারা স্বামী স্ত্রী থাকেন। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার শেষ রাতে সেহেরী খেয়ে যার যার রুমে ঘুমিযে পরেন তারা। ভোর ৬টায় রাবেয়া মঞ্জিলের সেফটি ট্যাংকি কিস্ফোরিত হয়ে বিকট শব্দ হয়ে ভ’মিকম্পের মত বিল্ডিংটি কেপে উঠে। ওই ঘটনায় মাশনুন (১২) ও জিসান (৮) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে। এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান পাশের বাড়ীর হুমায়ুন কবিরের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী লাবনী আক্তার (৩০)। বিস্ফোরণে পাশের একটি ৪ তলা বাড়ী ও একটি টিনশেড বাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরো ৫ জন। তারা হলেন,নিহত নারীর মেয়ে নাবিলা (৮), তামান্না (১২) শহীদ (৪৫), লেকমত শেখ (৫৫) রুবেল (২৮)।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, র্দূঘটনার পর আমরা লাশ ৩টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য র্মগে প্রেরণ করেছি। আহত ৫ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুত্বর। আমরা আহতদের খোজ খবর নিচ্ছি। সেফটি ট্যাংকি বিস্ফোরনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার থানায় মামলা দায়ের করেছে। ভবনের মালিক রফিকুল ওরফে হাসান পলাতক রয়েছে। আমরা বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজগর হোসেন জানান, নাসিক এলাকার ভবনের বিষয়ে আমরা কিছুই করতে পারি না। ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য বিষয় গুলো দেখেন রাজধানী উন্নয়ন কর্পোরেশন (রাজউক)।